Restaurant এর ঠিক করণারে বসে আছে নিদ্রা তার

Restaurant এর ঠিক করণারে বসে আছে নিদ্রা তার সামনে আহান।আহান পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে নিদ্রার দিকে তাকে খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে।পর্যবেক্ষণের বিশেষ কারণ নিদ্রার সৌন্দর্য নয় বরং তার অসুন্দর অদ্ভুত গেটাপ।পড়নে ফেকাসে রঙের সুতির সেলোয়ার কামিজ চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা মাথার খসখসে ধূলোই মাখা চুল গুলো একপাশে বেনি করা মাথা নিচু করে হাত গুলো একটি আরেকটার সাথে ঘষাঘষি করছে।আহান একটু নড়ে বসে জিজ্ঞেস করে
আহান : খিদে পেয়েছে তোমার??
নিদ্রা : ………
আহান : কি হলো কিছু জিজ্ঞেস করছি।বোবা নাকি তুমি।বলো খিদে পেয়েছে? ??
নিদ্রা : (না সূচক মাথা নাড়ে)
আহান : তাই নাকি।কিন্তু কেন্টিনে যে এতো গুলো নাস্তা নিয়ে বসে ছিলে খেতে তো পারোনি।খিদে যখন ছিলো না না নিয়েছিলে কেন।
আহান নিদ্রার কোনো রেসপন্স না পেয়ে একটি ওয়াটার কে বেস কিছু খাবারের অর্ডার দেয়।কিছুক্ষণ পর ওয়াটার খাবার গুলো দিয়ে যাই।আর আহান তা থেকে খাওয়া শুরু করে।নিদ্রা একটু পর পর আড় চোখে তাকাচ্ছে।বিষয় টা আহান খেয়াল করে আহান জানে মেয়েটার খিদে পেয়েছে কেন্টিনে কিছু ছেলে মেয়ে ওর খাবার গুলো পেলে দেই আর আহান নিদ্রাকে সেখান থেকে নিয়ে আসে এখানে।সে নিদ্রার উদ্দেশ্যে বলে
— : খাওয়া শুরু কর আমি এতো খাবার একার জন্য অর্ডার করিনি।তুমি না খেলে খাবার গুলো অযতায় নষ্ট হবে
আহানের কথা শেষ করার আগেই নিদ্রা গব গব করে খাওয়া শুরু করে যা দেখে আহানের গা জ্বলে উঠে কারণ নিদ্রা খুব বাজে ভাবে খাচ্ছে দুই হাতে চেটে চেটে। পাশে বসে থাকা কাস্টমার বমি করার উপক্রম কিন্তু নিদ্রার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই সেদিন নিজের মতন খেয়ে যাচ্ছে।আহানের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে
এবার আসা যাক ওদের পরিচয়ে।আহানের পুরো নাম আহান চৌধুরী দেশের খুব নাম করা এক বিজনেস ম্যান এর ছেলে।দেশের নামি দামি এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র।ভার্সিটির প্ৰতিষ্ঠাতা অবশ্য তার বাবা আমিন চৌধুরী নিজেই কিন্তু ব্যবসায় কাজে ব্যস্ত থাকাই ভার্সিটির দায়িত্ব নিজের মেয়েকে দেন।
আহানা চৌধুরী দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনি বুদ্ধিমতী।ছাত্র ছাত্রীরা তাকে খুব পছন্দ করে।আবার ভয়ও পাই।বাবার প্রতিষ্ঠান হওয়াতে প্ৰিন্সিপাল হতে খুব একটা কষ্ট হয়নি । বয়স ২৭ এর মত।তার জীবনে সব থেকে গুৰুত্বপূৰ্ণ আর বেচে থাকার একমাত্র কারণ হলো আহান। আহান কে সে চোখে হারায় এক মুহূর্তের জন্যেও আহানকে নিজের থেকে আলাদা করে না।আহানের বয়স যখন মাত্র ১২ তখন তাদের মা মারা যাই আহার বয়স তখন ১৬ ক্লাস টেনে পড়ুয়া ছাত্রী।মায়ের মৃত্যুর পর থেকে ভাইকে আগলে রেখেছে।মায়ের চেয়েও বেশি ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছে।আমিন চৌধুরী ব্যবসা নিয়ে এতো ডুবে থাকেন নিজের ছেলে মেয়েদের খবর নেওয়ার সময় তার ছিলো না।টাকার পিছনে ছুটে ছুটে জীবন শেষ পথে তবু এখনো বদলাননি।ফেমিলী তার কাছে কোন প্রাধান্য পাইনি শুধু টাকা উনার কাছে সব।ছেলে মেয়েদের কোনো কিছুর অভাব তিনি রাখেননি কিন্তু আসল জায়গাটায় অপূর্ণ। ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা কোনটাই ছেলে মেয়ে কে দেইনি। উনার মতে সুখে থাকার একমাত্র চাবিকাঠি বিলাসিতা।কিন্তু উনি জানেনা ভালোবাসা থাকলে কুড়ে ঘরেও সুখের অভাব থাকে না। আহান বাবাকে খুব ঘৃণা করে কারণ তার মতে মায়ের মৃত্যুর জন্য তার বাবা দায়ী।প্রায় ১০টা বছর সে বাবার সাথে কথা বলে না।আহানাও বাবার প্রতি খুব একটা মায়া দেখাই না।তারা নিজেদের এক অন্য দুনিয়াই বানিয়ে নিয়েছে। বাবার দেওয়া কোনো কিছুই তারা গ্রহণ করে।নিজেদের ইনকাম দিয়ে চলে।এক কথাই বলতে গেলে তাদের মনেও বাবার জন্য ভালোবাসার জায়গাটা খালি।তাতে অবশ্য আমিন চৌধুরীর কিছু যায় আসে না
যাক এবার আসি নিদ্রার পরিচয়ে। তাকে সবাই একটা খেত গাইয়া মেয়ে হিসেবে চিনে এমনকি ভার্সিটি তে তার বিশেষ নাম হলো ডাস্টবি গার্ল।এক ডাকেই পরিচিত সে এই মানে।কোথা থেকে এসেছে কোথায় থাকে এতো বড় ভার্সিটিতে এডমিশ্যন কিভাবে পেলো কেউ জানে না।একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়া মানে অনেক টাকার বেপার।নিদ্রা কে দেখে মনে হয়না ও এতো টাকা দিয়ে পড়তে পারবে।ভার্সিটিতে সবাই হাইক্লাসিক ছেলে মেয়ে তাই নিদ্রার মত বস্তির মেয়ে কে কেউ পছন্দ করে না ।কিন্তু আহানা কোনো একটা অজানা কারণে ওকে দেখতে পারে।নিদ্রা পড়া লেখাই একজন টপার তাই কেউ কেউ ভাবে ও স্কলারশিপ নিয়ে এসেছে।কিন্তু ভার্সিটিতে স্কলারশিপের কোনো ব্যবস্থা নেই তা কেউ জানে না।
ফিরা যাক গল্পে
আহান : এই মেয়ে এভাবে খাচ্ছ কেন।তোমার বাসায় কিভাবে খেতে হয় শেখাইনি😠
নিদ্রার কানে যেন কোন কথাই যাচ্ছে না।restaurant এর কেউ কেউ তো বলা শুরু করেছে “এতো বড় লোকের ছেলের choice কি খারাব” আরো কতো কথা।আহান আর না পেরে নিদ্রা কে টানতে টানতে ওয়াশরুমে নিয়ে যাই এক প্রকার ছুড়ে মারে নিদ্রাকে আর বেসিনে দুই হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রাগ কনট্রোল করার চেষ্টা করছে।নিদ্রা এক কোণে দাড়িয়ে আহানের ধরা হাত টা অপর হাত দিয়ে মালিশ করছে অনেক ব্যথা পেয়েছে ও
আহান : আমার সব মান সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে stupid girl। আমারি ভূল ছিল তোমার মতন একটা 3rd class বস্তির মেয়েকে আমি এখানে নিয়ে এসেছি।তোমার মত মেয়ের তো ফুটপাতের বালি যুক্ত খাবার গুলোই শ্রেয় ।
নিদ্রা : how dare you? You talking with me like that and don’t call me a 3rd class.you have no idea about my identity
আহান কিছুটা অবাক হয়।নিদ্রা পানি ছেড়ে হাত মুখ ধুতে থাকে। আহান অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নিদ্রা শুধু এক জায়গাতে পানি দিয়ে ঘষতে আছে।দেখে বুঝা যাচ্ছে রেগে গেছে।আহানের কথা গুলা তার self-respect এ hurt করেছে।আহান ভাবছে ওর মতো মেয়ের আবার self-respect আছে নাকি।হুম থাকতেই পারে বস্তির মেয়ে বলে self-respect থাকবেনা।তারোই তো ভূল ওকে এখানে নিয়ে এসে rude behave করেছে ওতো নিজে থেকে আসে আহানই তো নিয়ে এসেছে।এসব ভাবতে ভাবতে আহানই খেয়াল করে নিদ্রার বাম গালে বেস কিছু সস লেগে আছে।আহানই নিদ্রাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে ওর বাম গাল টি পরিষ্কার করতে শুরু করে।ওর চোখ পড়ে নিদ্রার চোখের দিকে
আহান : কি মায়াবী চোখ দুটি অন্য এক জগতে হাড়িয়ে যাচ্ছি ।মেয়েটাকে এই মুহূর্তে মোটেও খেত মনে হচ্ছে না খুব মায়াবী লাগছে চেহারাটা।আর ঠোঁট গুলো মনে হচ্ছে কোনো এক নেশাময় সাগর আর এই সাগরে আমি সে কোনো সময় ডুব দিতে রাজি
চলবে